ফিলাশ
১
হারেস মিয়া কমোড থেকে সোজা দাঁড়িয়ে ফ্ল্যাশের ছোট্ট বোতামটায় চাপ দিতেই জাদুর মতো কোত্থেকে যেন ঘড় ঘড় শব্দ করে পানি বের হয়ে ময়লাগুলোকে সরিয়ে দিয়ে পরিষ্কার পানি দিয়ে ভরিয়ে দেয়। চোখ সরে না তার। আহ! কী সুন্দর বুদ্ধি মানুষের! তার মনে হয় এখনি আবার বসে পেট থেকে আরও কিছু আইটেম বের করে আবার ফ্ল্যাশ করে এই কারুকাজ দেখে। আহা! সকালবেলা ঝোপের ভেতর যাওয়ার দরকার নাই! আশপাশে কেউ এলো কি না তা দেখার জন্য চারদিকে সারাক্ষণ নজর রাখা লাগে না।
নিশ্চিন্তে, আরামে কাজ সেরে নাও। কত শান্তি!
২
হারেস মিয়া তার দূর সম্পর্কের খালাতো ভাইয়ের ঢাকার বাসায় এসেছেন গত সপ্তাহে। তার পর থেকেই আজব আজব সব জিনিস দেখছেন। আজও শুনেছেন। অতি গোপন এক কথা!
বাসার কাজের মেয়ে সকালবেলা গেস্ট রুম পরিষ্কার করতে ফিসফিস করে বলে, ‘হারেস মামা, মীরা আপার কাহিনি শুনছেন?’
‘কী কাহিনি?’
‘আপা ফিলাশ করছে!’
‘মানে?’
‘পেটে বাচ্চা আসছিল! তারে ফিলাশ করছে!’
‘বাচ্চাও কি ফিলাশ করা যায় নাকি?’
‘যায়! ক্লিনিকে গেলেই হয়!’
হারেস মিয়া স্মৃতিকাতর হয়ে পড়েন। বছর বিশেক আগে গ্রামে একটা বড় লজ্জায় পড়েছিলেন। একটা অবিবাহিত মেয়ের পেটে বাচ্চা চলে আসে।
বাড়ির লোকজনের চাপাচপিতে সে হারেস মিয়ার নাম বলে দেয়। এই ঘটনা নিয়ে পরে কত বিচার-আচার। শেষ পর্যন্ত বাধ্য হয়ে তার মেয়ের বয়সী মেয়েটাকে তার বিয়েই করতে হয়। আহ! যদি এই ফিলাশের কথা জানতেন!
জীবনটাকে আরও উপভোগ করতে পারতেন! কত সুযোগ যে তার হাতছাড়া হয়ে গেছে পেটে বাচ্চা আসার ভয়ে!
(প্রথম প্রকাশ- প্রতিধ্বনি, ০১ মার্চ ২০২৩)