ফটোগ্রাফ
‘একটা অটোগ্রাফ দেবেন প্লিজ!’ ক্রেতার কথায় পাশ ফিরে তাকান লেখিকা। আজ বিকেল থেকেই এই শব্দমালা শুনছেন তিনি। ভালোই লাগছে তার। পরিশ্রম সার্থক হয়েছে বলা যায়। পাঠকদের আকৃষ্ট করার বিশেষ পরিকল্পনার অংশ হিসেবে দামি একটা পারফিউম ব্যবহার করেছেন। এই পারফিউম তার গন্ধ দিয়ে অনেক দূর থেকে মানুষদের টেনে আনবে তার কাছে। তিনি উজ্জ্বল রঙের শাড়ি পড়েছেন। শাড়িটার রং তাকে তার আশপাশের মানুষ হতে আলাদা করবে। খুব পরিপাটি করে মেকাপ করেছেন যাতে কেউ একবার তার দিকে তাকালে আর চোখ ফেরাতে না পারে। লেখিকা নিশ্চিত তার এই ক্রেতাও তার টানেই এখানে এসেছেন।
ক্রেতার কাছ থেকে বইটা নিয়ে নাম জিজ্ঞেস করেন, ‘কী নাম লিখব?’
‘কোনো নাম লিখতে হবে না!’ উত্তর ভেসে আসে।
লেখিকা অটোগ্রাফ দিয়ে বইটা হাতে তুলে দিতেই আরেক আবদার, ‘আপনার সাথে একটা ফটোগ্রাফ নিতে পারি।’
‘না, পারেন না!’ বলেই তার ক্রেতার অভিব্যক্তি দেখার জন্য অপেক্ষা করেন। মুখটার করুণ অবস্থা দেখে মায়া হয়। ‘ফটোগ্রাফ নিতেই হবে?’
‘হ্যাঁ!’
‘কিন্তু একটা সমস্যা আছে যে।’
‘খুব বড় কিছু?’
‘হ্যাঁ, খুব বড় ধরনের।’
‘জানতে পারি?’
‘না, পারেন না,’ বলেই তার ক্রেতার অভিব্যক্তি দেখার জন্য অপেক্ষা করেন। এবার তার চেহারা দেখে আরও বেশি মায়া হয় লেখিকার।
‘ঠিক আছে বলছি। আরও একটু কাছে আসুন।’ লেখিকা তার মুখ তার ক্রেতার একদম কানের কাছে নিয়ে বলেন, ‘আমার সাথে গত সপ্তাহ পর্যন্ত যারাই ফটোগ্রাফ তুলেছে, তাদের কেউ বেঁচে নেই। সবার অস্বাভাবিক মৃত্যু হয়েছে।’
(প্রথম প্রকাশ- প্রতিধ্বনি, ০১ মার্চ ২০২৩)