খাঁচা
১
ক্লাস থ্রিতে পড়া রিনির প্রথম চিড়িয়াখানায় আসা। বাবার হাত ধরে প্রবেশ পথ পার হতেই তার কী লাফালাফি! এক দৌড়ে চলে যায় বানরের খাঁচার পাশে।
‘এত বড়!’
‘কী, মা?’
‘খাঁচা, বাবা। বানরের খাঁচা।’
পাশেই বক পাখির গোলাকার খাঁচা। আবারও রিনির বিস্ময়, ‘এত বড়!’
‘কী রে মা?’
‘খাঁচা, বাবা। পাখির খাঁচা।’
এভাবে একেকটা খাঁচার পাশে যায় আর রিনির কণ্ঠে বিস্ময় ঝরে পড়ে, ‘কত বড় খাঁচা!’
বাবা বলে, ‘খাঁচা নিয়ে এত ভাবছিস কেন রে মা?’
‘বাবা, আমার খাঁচাটা তুমি দেখেছ?’
‘তোর আবার খাঁচা কোথায়?’
‘পরে একদিন দেখাব তোমাকে। প্রমিজ।’
২
রিনি স্কুলে যাওয়ার জন্য প্রস্তুত। বাইরে স্কুলভ্যানের বেলের শব্দ।
রিনি বাবাকে টেনে বাইরে নিয়ে যায়। ‘তোমার জন্য সারপ্রাইজ! এই দেখ আমার খাঁচা। আমি খাঁচার ভিতরে গিয়ে বসি তারপর দেখ কেমন লাগে।’
ছোট্ট একটা স্কুলভ্যানে সাত জন মেয়ে গাদাগাদি করে বসে আছে। বাবার চোখে জল এসে যায়। রিনিকে কোলে নিয়ে বলে, ‘আজ থেকে তোকে আর খাঁচায় করে স্কুলে যেতে হবে না। আমি নিজে রেখে আসব। আমরা হেঁটেই যাব। পারবি তো?’
রিনি বাবার গালে চুমু দিয়ে বলে, ‘খুব মজা হবে বাবা। কিন্তু ছুটির পরে আনবে কে? আমি আর ঐ খাঁচায় উঠব না।’
‘মামনি নিয়ে আসবে। ঠিক আছে?’
‘এই ছোটো খাঁচাগুলো ডিলিট করা যায় না বাবা?’ বাবার চোখ আবারও ভিজে আসে। ‘যায় মা, অবশ্যই যায়।’
১৭ নভেম্বর ২০২২